জোড়া ক্রোমোজম
১৯০২ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : ওয়ালটন সাটন
ক্রোমোসোম- ডি. এন.এ.র নিবিড় কুণ্ডলী প্রথম দেখতে পান ( ১৮৪২ খ্রী ) সুইস্ উদ্ভদ-বিজ্ঞানী কার্ল ফন্ নাগেলি ( Karl von Nageli ); এর সুপ্রজনন বিষয়ক তাৎপর্য তখন নগরে আসেনি । একইভাবে গ্রেগর মেণ্ডেল-এর সুপ্রজনন ও উত্তরাধিকার বিষয়ক অনুশীলন ( ১৮৬৬ খ্রী ) সেইসময় কম প্রভাব ফেলেছিল । এই দুই প্রত্যয়কে একসূত্রে বাঁধলেন এক জীববিজ্ঞানী, ১৯০২ খ্রী-তে, যা' থেকে উদ্ভত হয়েছে ' জোড় ক্রোমোজম' (paired chromosomes) - তত্ব । এই জীববিজ্ঞানীর নাম ওয়ালটন সাটন ।
মেণ্ডেল বিভিন্ন জাতের কড়াইশুটি নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন । বেঁটে জাতের কড়াইশুটির সঙ্গে লম্বা জাতের মিলন ঘটানো হল- লম্বা জাতের ফুলের রেণু লাগিয়ে দিলেন বেঁটে জাতের কড়াইশুটি লতার গর্ভকেশরে । এই ফুলের বীজ আলাদা করে পরের বৎসর বপন করে দেখা গেল সব জাতের চারাই লম্বা হয়েছে । এর বীজ থেকে পরের বৎসর দেখা গেল তিনভাগ হয়েছে লম্বা, বাকি বেঁটে । চতুর্থ বৎসরে বেঁটে গাছের বীজ থেকে কেবল বেঁটে, লম্বা গাছের বীজ থেকে তিনভাগ লম্বা, একভাগ বেঁটে । পরীক্ষা থেকে মেণ্ডেল ধারণা দিলেন জীবের দৈহিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের জন্য কতকিগুলি গুণ অবশ্যই প্রয়োজন আর তার প্রত্যেকটি গুণ পরিস্ফুট করতে জননকোষের কোনও সূক্ষ্ম অংশই দায়ী । আরও ধারণা করলেন, উদ্ভিদের মত প্রাণীদেহেই একই ঘটনা ঘটে ।
সাটন জীববিজ্ঞানের একটি পদ্ধতি, নাম মায়োসিস (meiosis) নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে দেখলেন যে ক্রোমোজমগুলি সতন্ত্রভাবে জোড়ায় জোড়ায় পর্যবসিত হয় । তিনি সিদ্ধান্তে আসলেন জোড়া ক্রোমোসোজমগুলি হল উত্তরধিকারের এক একটি ইউনিট ; অবশ্যই এরা বংশানুচরিত্র বহন করে । প্রসঙ্গতঃ মনুষ্যদেহে ২৩ জোড়া ক্রোমোজম আছে- মোট ৪৬ ক্রোমোজোম ।
এই সিদ্ধান্ত সকলেই সহজে গ্রহণ করলেন না । ১৯১৫ খ্রী-তে তেরো বৎসর পরে টমাস মর্গান ( Thomas Morgan ) ড্রসোফিল মাছির দেহে বংশগত নানা পরিবর্তনের উপর অনুশীলন করে সাটনের সিদ্ধান্তকে প্রমাণ করলেন ।