মহাদেশীয় সঞ্চরণ


মহাদেশীয় সঞ্চরণ 
(Continental drift)
                                                                  

আবিষ্কার : ১৯১২ খ্রী
বিজ্ঞানী : আলফ্রেড ওয়েজেনার


জার্মাণ বিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়েজেনার প্রথম প্রস্তাব দিলেন মহাদেশীয় সঞ্চরণ বা মহীসঞ্চরণ-এর । তিনি তর্ক করলেন যে, আজিকার মহাদেশগুলি একসময় একটি ভূখণ্ডে আবদ্ধ ছিল । তিনি এর নাম দিলেন প্যাঞ্জিয়া (Pangaea), গ্রীক ভাষায় যার অর্থ 'এক জমি' (all land) । পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ কম নিবিড় পদার্থ দ্বারা নির্মিত হওয়ায় ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং দু'-এক সেণ্টিমিটার করে আলাদা হয়ে যাচ্ছে বিগত কয়েক লক্ষ বত্সর ধরে। চিত্রে দেখানো

চিত্র - Pangaea-র প্লেট-চালন দ্বারা সঞ্চলন

হয়েছে কি ভাবে Pangaea-র প্লেট-চালন দ্বারা বহু বত্সর ধরে মহীসঞ্চরণ হয়ে আসছে । এটা সম্ভব যে প্লেটগুলি চালিত হয় গুরুমণ্ডলে (Pangaea) পরিচলন প্রবাহের (convection current) জন্য ।
পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশগুলিকে ম্যাপে আনার পর দেখা গেল বেশ কয়েকটি সৈকতাঞ্চল, যেমন দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা এমনই, যে তাদের একত্র করা যায় 'ধাঁধা-ঘুটির (puzzle pieces) মত' । আলফ্রেড ওয়েজেনারের মনে হল, যে ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্রাঘিমাংশ অনুযায়ী গ্রীনল্যাণ্ড ইওরোপের মূল ভুখণ্ড থেকে সরে এসেছে বিগত একশ বছরে । ইওরোপের প্যারী এবং উত্তর আমেরিকার ওয়াশিংটন-এর মধ্যে প্রতি বছরেই যেন ১৫ ফুট দুুরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে ; আর সান ডিয়াগো ও সাংহাই প্রায় ৬ ফুট কছাকাছি চলে এসেছে । তার উপর ওয়েজেনার জানতে পারলেন, ছোট ছোট প্রাণীরা, যারা মহাসাগর পাড়ি দেবার ক্ষমতা রাখে না, তাদের জীবশ্ম পাওয়া গেছে বিভিন্ন মহাদেশে সেসময় খুব অল্প সংখ্যক মানুষ ওয়েজেনারের দেওয়া তথ্য গ্রহণ করেছিল । ওয়েজেনারের মৃত্যুর পরে আরথার হোমস প্রকাশ করলেন যে পৃথিবীর গুরুমণ্ডলে তাপীয় পরিচলন-এর জন্য এই সঞ্চলন সম্ভব । হোমস আরও ইঙ্গিত করলেন যে মহাদেশগুলি চালিত হয়নি, বরং ভূত্বক (earth's crust)দ্বারা 'বাহিত' হয়েছে । ১৯৬০ খ্রীষ্টাব্দে নূতন প্রমাণ সামনে এলো । মধ্য-মহাসাগরীয় ভূশিরার (ridge) আবিষ্কার এবং হ্যারী হেস ও অন্যান্যদের গবেষণাপত্রগুলি 'ভূগাঠনিক প্লেট' (plate tectonic)-এর ধারণা নিয়ে আসায় ভাবনাগুলি পেল এক পূর্ণাঙ্গরূপ, যার শিকড় কিন্তু রয়েছে আলফ্রেড ওয়েজেনারের কাজে ।