তুষারযুগের এক নূতন ঘূর্ণন
আবিষ্কর : ১৯২০ খ্রী
বিজ্ঞানী : মিলুটিন মিলানকোভিচ
ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বিজ্ঞানীরা ভূতাত্বীয় ও জীবাশ্মের রেকর্ড দেখে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে পৃথিবী একটা হিমক্রিয়ারর বশে ছিল দীর্ঘ সময় ধরে । কিন্তু হিমযুগের কারণ তাঁরা ধরতে পারেননি ।
১৯২০ খ্রী-তে সার্বিয়ার বিজ্ঞানী মিলুটিন মিলানকোভিচ একটি সমাধান দিলেন । জোসেফ আধেইমার (Joseph Adhema) এবং জেমস্ ক্রোল-এর পূর্বেকার জ্যোতির্বিজ্ঞানসম্ভূত তত্বের ভিত্তিতে তিনি ধৈর্যসহকারে পরিমাপ করলেন সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর অক্ষপথের পরিবর্তন, হিসাব করলেন মহাকর্ষীয় প্রভাব, অধ্যয়ন করলেন পৃথিবীর সম্পর্কে গ্রহ ও তারাদের অবস্থান । তিনি দেখালেন, মহাশূন্যে আমাদের গ্রহের কক্ষপথ নির্ভরশীল তিনটি আবর্তমানীয় (cyclical) পরিবর্তনের উপর ।
প্রথমতঃ, পৃথিবীর কক্ষপথের উত্কেন্দ্রতা (eccentricity) । প্রায়-বৃত্তাকার থেকে উপবৃত্তকারে পরিণত হচ্ছে এক ১০০,০০০ বত্সরের চক্র-অনুসারে ।
দ্বিতীয়তঃ, পৃথিবীর অক্ষের ক্রান্তিকোণ (obliquity), যা' এর বিভিন্ন গোলার্ধের ঋতু স্থির করে ; এই ক্রান্তিকোণ ৪১,০০০ বত্সর-চক্রে উঠা-পড়া করে ২২.১ ডিগ্রী থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে ।
তৃতীয়তঃ, পৃথিবীর ঘূর্ণনাক্ষ (axis of rotation) একটা ঘূরন্ত লাট্টুর মতো, যার জন্য পৃথিবী ২৪,০০০ বত্সর-চক্রে অয়নচলনে (precession) ।
এইসবই ব্যাখ্যা দেয় হিমক্রিয়ারর, যার ফলে পৃথিবীতে আসা সৌর-বিকিরণে ঋতুজ এবং অক্ষাংশীয় পরিবর্তন হয় । জলবায়ু-পরিবর্তন বুঝতে এটি একটি তাত্পর্যপূর্ণ তত্ব ।