বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত অনুবেদন গুলি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
সভ্যতার সূচনাপর্ব থেকেই মানুষ জানতে চেয়েছে তার সৃষ্টির আদি রহস্য। যদিও মানব সভ্যতা বিকাশের ইতিহাস পৃথিবীর নিজ বয়সের তুলনায় সামান্যই। আধুনিক বিজ্ঞানমতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে। আর পৃথিবী তৈরি হয়েছে তার বহু পরে। মোটামুটি ৪৬০ কোটি বছর পর। এর মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণতা কমেছে। বায়ুমণ্ডলের রূপান্তর ঘটেছে। ক্রমে ক্রমে বদলেছে ভূপৃষ্ঠের গঠন, অনুভূত হয়েছে প্রাণের স্পন্দন। বাতাসে যুক্ত হয়েছে অক্সিজেন। কালক্রমে পৃথিবী হয়ে উঠেছে প্রাণধারণের উপযোগী।
এই ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি কিংবা পৃথিবীর জন্মকথা নিয়ে বহু রকমের ধারণা, বিশ্বাস, অনেক কাল থেকেই বিভিন্ন সম্প্রদায় সমাজ এবং সংস্কৃতিকে নানা ভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু বিগত দু’ শতকের বিজ্ঞান গবেষণা আজ পৃথিবীর জন্ম সম্পর্কে এমন সমস্ত তথ্য দিচ্ছে যা অষ্টাদশ শতকেও কল্পনার অতীত ছিল। বস্তুজগৎ থেকেই প্রাণের উৎপত্তি --- বিজ্ঞান যত সহজে আজ এ কথা বলতে পারে, দু’ বছর আগে তা বলা তত সহজ ছিল না। প্রজাতি পরিবর্তনশীল অর্থাৎ এদের বিবর্তন হয়। দশ বছর গবেষণার পর এই সিদ্ধান্তে ডারউইন উপনীত হলেও, বিশ বছর কাল সেই সত্য গোপন করতে হয়েছিল তাঁকে। কেননা পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ জীব যে মানুষ তাঁরই পিতৃপুরুষ শিম্পাঞ্জি কিংবা গোরিলা, এটা তৎকালীন সমাজ যে মেনে নিতে পারবে না, তা ডারউইন উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। ব্রুনো, কোপার্নিকাস কিংবা গ্যালিলিওর জীবনী থেকে রক্ষণশীল সমাজের এই বিরোধিতা সম্পর্কে আজ অনেকটাই আমরা ধারণা করতে পারি।
ডারউইনের জন্মের পর দু’শো বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছে আরও অনেক তথ্য। আবিষ্কৃত হয়েছে মানুষের আদি পুরুষদের নানা জীবাশ্ম। পৃথিবীর বিবর্তনের সমস্ত ইতিহাস এখানে আমরা বর্ণনা করব না, বলব শুধু মানুষের কথা অর্থাৎ আধুনিক মানুষের জন্মবৃত্তান্ত। জেনে নেব আমাদের পূর্বপুরুষেরা দেখতে কেমন ছিল, কবে কোথায় কেমন চেহারার মানুষ দেখা দিয়েছিল, তারই সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত।