আলোর দ্বৈতসত্তা
প্রকাশ : ১৯০৫ 
বিজ্ঞানী : আইনস্টাইন


১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দে আইনস্টাইন আলোক-তড়িৎ প্রভাব ( photoelectric effect ) আলোচনায় আলোর দ্বৈত চরিত্র প্রতিষ্ঠা করলেন- কণা ও তরঙ্গ । তিনি আলোক-তড়িৎ প্রভাবের উপর একটি ব্যাখ্যা দিলেন যা' আগেকার আলোর তরঙ্গ-তত্ব দ্বারা ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল না । আইনস্টাইন 'ফোটন'-এর অস্তিত্ব স্বীকার করে নিলেন আলোককণার শক্তির 'কোয়াণ্টা' হিসাবে । ফোটন মডেল আলোকশক্তির কম্পাংকের উপর ভিত্তি করে বস্তু ও বিকিরণের মধ্যে শক্তির অদানপ্রদান ব্যাখ্যা করে ।
আলোক-তড়িৎ প্রভাব-এ দেখা গিয়েছিল যে কোনও কোনও ধাতুর উপর আলো পতিত হলে ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট প্রবাহিত হয় । বোধ করি আলো ধাতুর ইলেক্ট্রনকে বিচ্যুত করে যার ফলস্বরূপ ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট প্রবাহিত হয় । কিন্তু পটাসিয়াম ব্যবহার করে দেখা গেছে, অত্যন্ত ক্ষীণ নীল আলো দ্বারা যত সামান্যই হোক না কেন ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট প্রবাহিত হয়, উজ্জ্বল নীল আলো-তে তা' হয়না । আলো ও বস্তুর সনাতনী বিদ্যা বলে যে আলোকতরঙ্গের সঞ্চার-সীমা (amplitude) ঔজ্জ্বল্যের সঙ্গে আনুপাতিক, উজ্জ্বল আলো বেশি কারেণ্ট দেবে । দেখা গেল তা' নয় ।
এই হেঁয়ালির ব্যাখ্যা দিতে আইনস্টাইন স্বীকার করে নিলেন যে, তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র থেকে ইলেক্ট্রন শক্তি আহরণ করতে পারে খণ্ডিত করণের মাধ্যমে ( কোয়াণ্টা বা ফোটন ) যেখানে শক্তির সঙ্গে আলোর কম্পকের সংযুক্তি হয় প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক (৬.৬২৬ X ১০দ্ম৩৪ সেকেণ্ড ) । একমাত্র সুউচ্চ, নিম্নতম ক্রিয়ামাত্রার উপরের কম্পক- এবং ক্ষমতা-সম্পন্ন নীল আলোর ফোটোন ধাতু থেকে ইলেক্ট্রনকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে, যা লাল আলোর ফোটন পারে না ।
পরবর্তীকালে আলোর দ্বৈতসত্তা ইলেক্ট্রনের চারিত্রিক বৈশিষ্টের মিলে গেল যখন লুই দ্য ব্রগলি-র অনুমান (hypothesis) এবং ডেভিডসন ও জারমার-এর পরীক্ষা এই সত্য প্রমাণ করল ।
আরও পরে, লেসার আবিষ্কৃত হলে এই তীব্রতা পরিমাপ করা সহজ হয়েছে ।