অপরিবাহিতা

অপরিবাহিতা (Superconductivity)
                                                            

আবিষ্কার : ১৯১১ খ্রী
বিজ্ঞানী : হান্স কামেরলিং ওনে,
কোমেলিস ডোর্সম্যান, গেরিট ইয়ান ফ্লিম ও গাইলস হয়েস্ট


১৯১১ খ্রীষ্টাবের ৮ এপ্রিল হান্স কামেরলিং ও তাঁর সহকর্মীরা অতিপরিবাহিতা আবিষ্কার করলেন । এঁরা দেখলেন যে পারদ-এর রোধ কমতে কমতে 'প্রায় শূন্যে' পৌঁছায় যদি তার তাপমান কমিয়ে প্রায় ৩ কেলভিন করা যায় । আজ, অতিপরিবাহিতা বিদ্যুত্-টেকনলজিতে বহু প্রয়োজন মিটিয়েছে যার মধ্যে আছে Magnetic Resonance Imaging (MRI) এবং High energy Particle Accelerator ।

কামেরলিং কিছু বিশুদ্ধ ধাতুর (পারদ এবং পরে টিন ও সীসার) বিদ্যুত্- পরিবাহিতা পরিমাপ করছিলেন অতি নিম্ন তাপমানে । কিছু বিজ্ঞানী, লর্ড কেলভিন-সহ, বিশ্বাস করতেন যে পরম শূন্যতাপে Absolute Zero) পরিবাহীর মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের গতি সম্পূর্ণভহবে রূদ্ধ হয়ে যাবে । অর্থাত্, পরম শূন্যতাপে তড়িতী রোধাঙ্ক (electrical resistivity) হবে সীমাহীন বৃহত্ (infinitely large ) । কামেরলিং ওনে সহ অন্যান্য বজ্ঞানীরা এই মত পোষণ করতেন যে, পরিবাহীর রোধ তাপমানের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশঃ কমতে থাকবে এবং পরিশেষে শূন্যমানে পৌঁছাবে । অগাসাস ম্যাথিউ দেখালেন যে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণতঃ ধাতুর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায় ; অর্থাত্ তড়িতী রোধাঙ্ক সাধারণতঃ কমে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে ।

১৯১১ খ্রী-র ৮-ই এপ্রিল ওনে দেখলেন যে ৪.২ কেলভিন তাপমানে তরল হিলিয়ামে নিমজ্জিত একটি কঠিন পারদের তারের রোধ হঠাত্ লুপ্ত হয়ে গেল । এই আবিষ্কারের মূল্য বুঝতে তাঁর দেরী হয়নি ( এটা প্রতীয়মান হয়েছে এক শতাব্দী পরে তাঁর 'নোটবই' থেকে ) । তিনি লিখেছেন, 'পারদ একটি নূতন অবস্থায় পৌঁছেছে, যাকে তার এই অসাধারণ বৈদ্যুতিক ধর্মের জন্য, নাম দেওয়া যায় 'অপরিবাহী অবস্থা' । পরবর্তীকালে কামেরলিংয়ের বিভিন্ন লেখায় 'অপরিবাহী' শব্দটি বার বার এসেছে ।

কামেরলিং ওনে তাঁর এই বিশেষ কাজের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন বিপুলভাবে এবং ১৯১৩ খ্রী-তে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন 'নিম্ন তাপমানে পদার্থের প্রকৃতির উপরে তাঁর গবেষণার জন্য, যার ফলে সম্ভব হয় তরল হিলিয়াম উৎপাদনে' ।