পৃথিবীর কিছু বিচিত্র ও রহস্যময় জায়গা

পৃথিবী বড় বিচিত্র ও রহস্যময় জায়গা। এর সব রহস্য এখনও ভেদ করা সম্ভব হয়নি। আবার গবেষকরা কিছু রহস্য তাদের যুক্তি ও প্রমান দ্বারা ভেদও করেছেন। তেমনই কিছু বিচিত্র ও রহস্যময় জায়গার বর্ননা তুলে ধরছি। আশাকরি ভাল লাগবে।


The Mysterious Sailing Stones of Death Valley
Death Valley উপত্যকার Racetrack Playa অংশটি জনমানবহীন এক বৈচিত্রময় জায়গা। সচরাচর অন্য প্রানীও দেখা যায় না এখানে। এই উপত্যকার রহস্যময় পাথরগুলি কোন এক অজানা কারনে তার স্হান পরিবর্তন করে বয়ে চলে। বছরের পর বছর ধরে এই পাথর নিজেরায় কিভাবে যেন চলছে সরল পথ ধরে। ধারনা করা হয় যে, পাথরগুলি প্রতি ২-৩ বছর পর পর অগ্রসর হয়। পাথরগুলো নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষনা চলছে। রহস্য আরও ঘনিভূত হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে,
•    বিস্তৃত এলাকা জনমানবহীন।
•    এখানে বন্যা হয় না।
•    এখানে এতো গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হয় না যে পাথরগুলির স্হান পরিবর্তনে সহায়ক হবে।
কিছু গবেষকদের মতে, মাটি যখন কর্দমাক্ত থাকে এবং বরফ পড়ে পিচ্ছিল হয় তখন বাতাসের ধাক্কায় পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই যুক্তিও গ্রহনযোগ্যতা পাইনি। কারন পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করে গ্রীষ্মকালে যখন মাটি একেবারে শুকনো থাকে এবং বরফও পড়ে না। তাছাড়া পাথরগুলি একই রাস্তায় চলে না। প্রতিটি পাথরের চলার পথ সম্পূর্ন ভিন্ন বা আলাদা।
যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে তারপরও এই পাথরের স্হান পরিবর্তনের ব্যাপারটা বরাবরই রহস্যময়।

Boiling Mud, New Zealand
নিউজিল্যান্ডের Rotorua য় অবস্হিত Taupo লেকে ফুটন্ত কাঁদা-মাটি দেখতে পাওয়া যায়। গবেষকদের ধারনা মতে, নদী ও লেকের পানি নির্দিষ্ট এই জায়গার উত্তপ্ত পাথরের উপরে প্রবাহিত হয় বলে এই অবস্হার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ব্যতিক্রমধর্মী এই জায়গাটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন।

Socotra
ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে বড় দ্বীপটি হচ্ছে Socotra। ৪৮০০ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি ইয়েমেনের অন্তর্ভুক্ত। অত্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী দ্বীপটি - পাথর, গাছপালা, এমন কি এখানকার জীবজন্তুও কেমন অদ্ভুত প্রজাতির। তাইতো এই দ্বীপকে The Most Alien-Looking Place on Earth বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রময় জায়গার মধ্যে এটি অন্যতম।

Don Juan Pond
জায়গাটি এ্যান্টার্টিকায় অবস্হিত। অত্যন্ত লবনাক্ত পানির কারনে জায়গাটি রহস্য সৃষ্টি করেছে। ১৯৬১ সালে জায়গাটি আবিস্কৃত হয়। এই পুকুরের পানি সমুদ্রের পানি থেকে ১৮ গুন বেশী লবনাক্ত। পুকুরটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩০০ ফুট, প্রস্হ ১০০ ফুট এবং গভীরতা .১০ মিটার। এই জায়গার তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রী কমে গেলেও অতি লবনাক্তার জন্য এই পুকুরের পানি কখনও সম্পূর্ন জমে যায় না।

Door to Hell
তুর্কেমেনিস্তানের Darvaz শহরে অবস্হিত এটি একটি জ্বলন্ত গর্ত। জ্বলন্ত জায়গাটি Door to Hell নামে সুপরিচিত। ১৯৭১ সাল থেকে জায়গাটি অবিরত দাউ দাউ করে জ্বলছে। ১৯৭১ সালে এখানে গ্যাস খনির সন্ধান মেলে। প্রাথমিকভাবে গবেষনা করে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন যার পরিমান ছিল সীমিত। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, এই গ্যাস জ্বালিয়ে শেষ করা হবে ফলে এর বিষাক্ততা ছড়ানোর সুযোগ পাবে না। এরপর এখানে গর্ত করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গবেষকদের অবাক করে দিয়ে তা এখনও অর্থাৎ ৪০ বছর ধরে একাধারে জ্বলছে। অথচ গবেষকরা নিশ্চিত ছিলেন যে, অল্প কয়েকদিন মধ্যে এই গ্যাস শেষ হবে এবং আগুন নিভে যাবে।