নিউক্লীয় বিভাজন

নিউক্লীয় বিভাজ
(Nuclear Fission)
                                                   

আবিষ্কার : ১৯৩৮ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : অটো হান, লিজে মাইটনার


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার ঠিক এক বছর আগে জার্মানিতে অটো হান একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন, সঙ্গে ছিলেন লিজে মাইটনার । তাঁরা ভারী পরমাণু সহ মৌল সৃষ্টি করার চেষ্টা করছিলেন যা' প্রকৃতিতে লভ্য নয়, নিউট্রন দিয়ে ইউরেনিয়ামকে উত্তেজিত করে ।

পরীক্ষার মাঝামাঝি সময়ে নাত্‍‌সীদের অত্যাচারে ইহুদী-বংশোদ্ভূত লিজে মাইটনারকে জার্মানি ত্যগ করে সুইডেনে চলে যেতে হল । অটো হান একাকী পরীক্ষার ফল নিরীক্ষা করে দেখলেন যে তাঁরা ভারী মৌলের স্থানে সৃষ্টি করেছেন অপেক্ষাকৃত হালকা মৌল- রেডিয়াম এবং বেরিয়াম । হান ধন্ধে পড়লেন- রেডিয়াম খুব বেশি হালকা নয়, কিন্তু বেরিয়ামের পরমাণু-ভর(atomic mass)ইউরেনিয়ামের ঠিক অর্ধেক । বেশি হালকা পরমাণু তৈরী করতে নিউট্রনকে ইউরেনিয়ামের কেন্দ্রীণ থেকে একশতের মত কণাকে আঘাত করে বাহির করতে হবে যা' বাহ্যতঃ অসম্ভব । হতোদ্যম হান পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলগুলি পাঠালেন মাইটনারকে । মাইটনার এই কুটিল করা ফল আলোচনা করলেন তাঁর ভাগিনেয় পদার্থবিদা অটো ফ্রিস্চা (Otto Frisch)- এর সঙ্গে ; তাঁদের বেশী সময় লাগেনি মীমাংসা করার । যখন একটি নিউট্রনকে ইউরেনিয়াম পরমাণুর দিকে 'ফায়ার' করা হয়, সেটি কেন্দ্রীনে শোষিত হয়, পরমাণুটি হয় অস্থির । পরমানুটির পক্ষে সবথেকে সুবিধাজনক ভাবে সুস্থির হওয়ার একমাত্র উপায় দুই সমানভাগে ভাগ হয়ে যাওয়া, উত্‍‌পাদিত হয় দুটি বেরিয়াম পরমাণু । এই দুটি পরমাণুর সম্মিলিত ভর হবে একটি ইউরেনিয়াম পরমাণুর থেকে কম, হৃত ভর পরিবর্তিত হবে শক্তিতে, আইনস্টাইনের বিখ্যাত সমীকরণ E = m. C2 দ্বারা ।
অনবধানতা হেতু এই আবিষ্কার আণবিক বোমা নির্মাণের রাস্তা খুলে দিল ।


Anne-Claire Pawsey